এতবছর যেই দল আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট বলে আসছিল, তারাই এখন বলছে- গণহত্যাকারীদের বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব এলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বাধা নেই। শুধু তাই নয়, বিএনপি বর্তমান সংবিধানও বাতিল করতে চায় না! প্রশ্ন হলো, এতে বিএনপির স্বার্থ কী?
আসলে বিএনপি চায় না, আওয়ামী লীগ একেবারে ধ্বংস হয়ে যাক। বরং তারা চায় আওয়ামী লীগ দুর্বল অবস্থায় টিকে থাকুক, যাতে বিএনপির অস্তিত্বও টিকে থাকে। বছরের পর বছর তারা আওয়ামীলীগ বিরোধী রাজনীতির ওপর নির্ভর করেছে। আওয়ামীলীগ যদি পুরোপুরি হারিয়ে যায়, তাহলে বিএনপিকে নতুন করে নিজেদের জবাবদিহির মুখে পড়তে হবে, যা তারা চায় না।
বিএনপির এই কৌশল বোঝার জন্য সংবিধানের প্রসঙ্গটাও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সংবিধান আওয়ামী লীগ নিজের মতো করে পরিবর্তন করেছে, যেখানে একদলীয় শাসন টিকিয়ে রাখার নানা ফাঁকফোকর রাখা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে ছাত্র-জনতা এবং সাধারণ মানুষ চায় এই সংবিধান বাতিল হোক এবং একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি হোক। কিন্তু বিএনপি সেটাতেও রাজি নয়! কারণ এই সংবিধান থাকলে ভবিষ্যতে তারা চাইলে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারবে।
আন্তর্জাতিক মহলেও বিএনপির এই অবস্থান সুবিধাজনক। আওয়ামীলীগ একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হবে, যেখানে বিএনপির ওপরও চাপ আসবে। কিন্তু যদি আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে টিকে থাকে, তাহলে বিএনপি সহজেই ‘গণতন্ত্রের রক্ষক’ সেজে নিজেদের বৈধতা বজায় রাখতে পারবে।
বিএনপির আসল লক্ষ্য ক্ষমতায় ফেরা, কিন্তু তারা চায় না কোনো মৌলিক পরিবর্তন হোক। তারা চায় আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে থাকুক, যেন ভবিষ্যতে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। জনগণের রক্তে লেখা আন্দোলনের অর্জনকে তারা শুধুই নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগাতে চাইছে।
Tags
আমার কথা